দাবা অলিম্পিয়াডে ইতিহাস গড়ল ভারত। প্রথম বার ওপেন বিভাগে সোনা জিতল তারা। শেষ রাউন্ডে স্লোভেনিয়াকে হারিয়েছেন রমেশবাবু প্রজ্ঞানন্দ, ডি গুকেশরা। সোনা জিতেছে ভারতের মহিলা দলও।
দু’বছর আগে দেশের মাটিতে পারেননি। ব্রোঞ্জ জিতেই সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছিল। কিন্তু হাঙ্গেরির বুদাপেস্টে ইতিহাস তৈরি করল ভারত। প্রথম বার ওপেন বিভাগে সোনা জিতল তারা। শেষ রাউন্ডে স্লোভেনিয়াকে হারিয়েছেন রমেশবাবু প্রজ্ঞানন্দ, ডি গুকেশরা। পুরো রাউন্ডের খেলা শেষ হওয়ার আগেই চ্যাম্পিয়ন হয়ে গিয়েছে ভারত। সোনা জিতেছে ভারতের মহিলা দলও।
স্লোভেনিয়ার বিরুদ্ধে শেষ রাউন্ডের আগে ভারতের পয়েন্ট ছিল ১০ রাউন্ডে ১৯। দ্বিতীয় স্থানে ১৭ পয়েন্ট নিয়ে ছিল চিন। শেষ রাউন্ডে আমেরিকার বিরুদ্ধে দু’টি খেলায় পয়েন্ট নষ্ট করে চিন। তখনই ভারতের সোনা প্রায় নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু অন্য দলের খেলার উপর নির্ভর করেনি ভারত। ভারতের গুকেশ, অর্জুন এরিগাইসি ও প্রজ্ঞানন্দ নিজেদের ম্যাচ জেতেন।
স্লোভেনিয়ার বিরুদ্ধে শুরুটা করেছিলেন বিশ্বের তিন নম্বর গুকেশ। ভ্লাদিমির ফেদোসিভের বিরুদ্ধে কালো ঘুঁটি নিয়ে খেলেন তিনি। তাতে অবশ্য সমস্যা হয়নি তাঁর। ভ্রাদিমির লড়াই করেও ভারতের ১৮ বছর বয়সি গুকেশকে হারাতে পারেননি। সামনেই বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হওয়ার জন্য চিনের ডিং লিরেনের বিরুদ্ধে নামবেন গুকেশ। তার আগে দাবা অলিম্পিয়াডে সোনা গুকেশের আত্মবিশ্বাস অনেকটাই বাড়াবে।
দ্বিতীয় ম্যাচে নামেন অর্জুন। তিনিও কালো ঘুঁটি নিয়ে খেলেন। স্লোভেনিয়ার ইয়ান সুবেলিকে হারান তিনি। এই দুই জয়ের পরে ভারতের সোনা নিশ্চিত হয়ে যায়। কিন্তু প্রজ্ঞানন্দ নিজের ম্যাচ হাল্কা ভাবে নেননি। তিনি অ্যান্টন ডেমচেঙ্কোকে হারান। এখনও একটি খেলা বাকি। বিদিত গুজরাতি সেই ম্যাচে খেলবেন। পুরো প্রতিযোগিতায় ২২ পয়েন্টের মধ্যে ২১ পয়েন্ট পেয়েছে ভারত।
প্রতিযোগিতার প্রথম আট রাউন্ড জেতে ভারত। নবম রাউন্ডে গিয়ে উজবেকিস্তানের সঙ্গে ড্র করে তারা। দশম রাউন্ডে আবার আমেরিকাকে হারায় ভারত। শেষ রাউন্ডও জিতলেন গুকেশরা। অর্থাৎ, ১১ রাউন্ডের মধ্যে ১০ রাউন্ড জিতেছে ভারত। একটি রাউন্ড ড্র হয়েছে। এর আগে ২০১৪ ও ২০২২ সালে দাবা অলিম্পিয়াডে ব্রোঞ্জ জিতেছিল ভারত। এ বার এল সোনা।
দলের সঙ্গে বুদাপেস্টে রয়েছেন ভারতের দ্বিতীয় তথা বাংলার প্রথম গ্র্যান্ড মাস্টার দিব্যেন্দু বড়ুয়া। সেখানে বসেই আনন্দবাজার অনলাইনকে তিনি বললেন, “ভারতীয় দাবায় সবচেয়ে বড় মুহূর্ত। এই মুহূর্তে যে আমি দলের সঙ্গে প্রতিনিধি হিসাবে আসতে পেরেছি তাতে আমি আরও খুশি। পুরো দল খুব ভাল খেলেছে। আমরা দাপট দেখিয়ে জিতেছি। বিশেষ করে গুকেশ ও প্রজ্ঞানন্দ অসাধারণ খেলেছে। ভারতীয় ফুটবলের সোনার সময় এ বার শুরু হল।”
পুরুষদের পরে ভারতের মহিলা দলও সোনা জিতেছে অলিম্পিয়াডে। ১০ নম্বর রাউন্ডে চিনকে হারিয়ে সোনার সামনে পৌঁছে গিয়েছিলেন আর বৈশালীরা। শেষ রাউন্ডে ভারতের সামনে ছিল আজেরবাইজান। তাদের ৩.৫-০.০৫ পয়েন্টে হারায় ভারত। ডি হরিকা, দিব্যা দেশমুখ ও বন্তিকা আগরওয়াল নিজেদের ম্যাচ জেতেন। ড্র করেন প্রজ্ঞানন্দের দিদি বৈশালী। চ্যাম্পিয়ন হয় ভারত। এই প্রথম বার ভারতের মহিলা দলও অলিম্পিয়াডে সোনা জিতল।